সতর
সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী (رَحٌمَةُ اللّٰهِ تَعَالىٰ عَلَيٌهِ) বলেন:
“সতরে আওরাত (অর্থাৎ সতর গোপন করা) প্রতিটি অবস্থায় ওয়াজিব। চাই সে নামাযে থাকুক বা না থাকুক। একা হোক বা সবার সামনে থাকুক। কোন সঠিক কারণ ব্যতিত একাকীত্বেও সতর খোলা বৈধ নয় এবং লোকদের সামনে হোক অথবা নামাযের মধ্যে (প্রতিটি অবস্থায়) সতর ঢেকে রাখা সর্বসম্মতিক্রমে ফরয।”
(বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩য় অংশ, ৪৭৯ পৃষ্ঠা)
পুরুষের সতর কতটুকু থেকে কতটুকু?
প্রশ্ন:- পুরুষের শরীরের কোন অংশটি সতর এবং নামাযে তার জন্য সতরের বিধান কী?
উত্তর:- সদরুশ শরীয়া, বদরুত তরিকা হযরত আল্লামা মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আমজাদ আলী আযমী (رَحٌمَةُ اللّٰهِ تَعَالىٰ عَلَيٌهِ) বলেন:
‘পুরুষের জন্য নাভীর নিচ থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত সতরে আওরাত অর্থাৎ ততটুকু অংশ ঢেকে রাখা ফরয। নাভী সতরে অন্তর্ভূক্ত নয় কিন্তু হাঁটু সতরে অন্তর্ভূক্ত। বর্তমান যুগে অধিকাংশ লোক এমন রয়েছে যে, লুঙ্গি অথবা পায়জামা এভাবে পরিধান করে যে, নাভীর নিচের কিছু অংশ খোলা থাকে আর যদি জামা বা পাঞ্জাবী ইত্যাদি দ্বারা (সেই অংশটি) এভাবে ঢেকে নেয় যে, চামড়ার রং প্রকাশিত না হয়, তবে তা ঠিক আছে। আর এরূপ না হলে হারাম, আর নামাযের মধ্যে এক চতুর্থাংশ পরিমাণ খোলা থাকলে নামাযই হবেনা এবং অনেক মূর্খ এমনও রয়েছে যে, লোকদের সামনে হাঁটু বরং রান পর্যন্তও খোলা রাখে এটাও হারাম এবং যদি এরূপ অভ্যাস হয়ে যায়, তবে ফাসিক (প্রকাশ্যে গুনাহকারী) বলে গন্য হবে।”
(প্রাগুক্ত, ৪৮১ পৃষ্ঠা)
মহিলাদের সতর
প্রশ্ন:- মহিলাদের সতরের ব্যাপারেও অবগত করুন আর এটাও বলে দিন যে, তাদের জন্য নামাযের মধ্যে কি কি ঢেকে রাখা আবশ্যক?
উত্তর:- মাকতাবাতুল মদীনা কর্তৃক প্রকাশিত “বাহারে শরীয়াত” ১ম খন্ডের ৩য় অংশের ৪৮১ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে: “স্বাধীন মহিলা (দাস-দাসীদের যুগ শেষ হয়ে গেছে, বর্তমানে সকল মহিলাই স্বাধীন) ও দূর্লভ হিজড়ার (অর্থাৎ যাদের মধ্যে নারী ও পুরুষ উভয়ের নিদর্শন পাওয়া যায় এবং এটা প্রমাণিত হয় না যে, পুরুষ নাকি মহিলা) জন্য সারা শরীরই লুকোনোর স্থান। মুখমন্ডল এবং হাতের তালু ও পায়ের তালু ব্যতিত, মাথার ঝুলন্ত চুল ও গদান এবং কব্জিও সতর (অর্থাৎ লুকোনোর বস্তু) এবং এগুলোকে ঢেকে রাখাও ফরয। কতিপয় ওলামায়ে কিরাম হাতের পিষ্টদেশ এবং পায়ের তালুকে সতর (অর্থাৎ লুকোনোর বস্তু) এর মধ্যে গন্য করেননি। যদি মহিলারা এতই পাতলা ওড়না পরিধান করে, যা দ্বারা চুলের রং প্রকাশ পায়, এমন ওড়না পরিধান করে নামায আদায় করলে নামায হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত তার উপর এমন কোন বস্তু না রাখে যা দ্বারা চুল ইত্যাদির রং ঢেকে যায়।”
রেফারেন্স-
বইয়ের নাম: পর্দা সম্পর্কিত প্রশ্নাত্তর
লেখক: আমীরে আহলে সুন্নত
প্রকাশনা: মাকতাবাতুল মদীনা
No comments